শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৬:৪৪ পিএম, ২০২১-০৩-২৩
আগুনে পুড়লো কক্সবাজারের বালুখালি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও আশেপাশের এলাকা। এতে কমপক্ষে ২ শিশুসহ সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা।
গতকাল আগুন লাগার পর যারা ঘরবাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন, তারা আজ সকালে পুড়ে যাওয়া ঘরে কোনকিছু বেঁচে গেছে কিনা, খুঁজে দেখছেন। তবে আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরগুলোতে অবশিষ্ট নেই তেমন কিছুই। মৃত ব্যক্তিদের মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়াও শুরু হয়নি এখনও। অগ্নিকা-ের ঘটনায় সন্দেহভাজন ৬ জনকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে রোহিঙ্গারা।
সোমবার বিকাল ৪টায় লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে রাত ১০টার দিকে। ৬ ঘণ্টার আগুনে পুড়ে গেছে কয়েক হাজার বসতঘর, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, ৯ নম্বর ক্যাম্প থেকে লাগা আগুন দ্রুতই আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। দাহ্য পদার্থ ও কাঁচা ঘরবাড়ি থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
এতে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার পরিবারের আনুমানিক ৭০ হাজার মানুষ এখনো খোলা আকাশের নিচে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দেখা দিয়েছে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট।
মঙ্গলবার সকালে দেখা গেছে, টেকনাফ-কক্সবাজার মহাসড়ক ও আশপাশের খোলা আকাশের নিচে তারা জড়ো হয়ে বিলাপ ধরে কাঁদছেন। ঘর নেই, বাড়ি নেই, নেই মাথা গুজার ঠাঁই তাদের। দুগ্ধপোষ্য শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা রয়েছেন সবচেয়ে দুরাবস্থায়।
ভয়াবহ অগ্নিকা-ে সর্বস্ব হারিয়ে তারা আবারও নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। গুরুতর আহত রয়েছেন অনেকেই। এই অবস্থায় বালুখালীর আগুনে পুড়া পরিবারগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্যাভাব। প্রকট আকার ধারন করছে বিশুদ্ধ পানি সংকট।
সব মিলিয়ে এক প্রকার মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবারে। স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন এনজিও সংস্থা কাজ করছেন ক্ষতিগ্রস্থদের। তবুও হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে ক্যাম্প এলাকায়।
জানাগেছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত উখিয়ায় বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে পুড়ে ৭ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে ১ জন নারী, ২ জন শিশু ও ৪ জন বৃদ্ধ রয়েছে।
গত সোমবার (২২ মার্চ) দুপুরে উখিয়ার বালুখালী ৮-ডব্লিউ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে।
এতে প্রায় ১২ হাজার ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একই সঙ্গে কয়েকশ দোকান, মসজিদ, মাদ্রাসা ও ভস্মীভূত হয়েছে। আগুনে বেশ কিছু মানুষ আহত হয়েছে। অনেক শিশু ও বয়োবৃদ্ধ নিখোঁজ থাকারও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
অগ্নিকা-ের ঘটনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাজার হাজার বাসিন্দা আশ্রয় হারিয়ে এক কাপড়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে আশ্রয় নিয়েছে। আশ্রয়হারা মানুষ তাদের ক্যাম্পের ঝুপড়ির সব মালপত্র হারিয়েছে। সন্তান-সন্ততিসহ স্বজনের খোঁজ না পেয়ে রোহিঙ্গা অনেক নারী-শিশুর আর্তনাদ চলছে মহাসড়কে।
সোমবার দুপুর তিনটার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে আগুন ভয়াবহ রূপ নেয়। আগুনে ক্যাম্পের ৮, ৯, ১০ ও ১১ নম্বর ব্লক সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। বালুখালী ক্যাম্পের বেশ কিছু এনজিও অফিস এবং এপিবিএনের একটি ব্যারাকও ভস্মীভূত হয়েছে।
স্থানীয় নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায়, আগুনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বালুখালী বাজারসংলগ্ন মার্কেট এলাকা। এখানে কয়েকশ দোকান পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়েছে। রোহিঙ্গাদের পরিচালিত দোকানগুলোর একেকটিতে কোটি টাকার বেশি মূল্যের পণ্যসামগ্রী ছিল।
এই বাজারসংলগ্ন স্থানীয়দের দু-তিন শ বাড়িঘরও পুড়ে গেছে। ক্যাম্পে বেশ কিছু মানুষ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ৭ জন পুড়ে মারা গেছে বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আগুনের খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ও পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থলে যান।
অগ্নিকা-ের শুরুতে স্থানীয় লোকজন ও ক্যাম্পের বাসিন্দা রোহিঙ্গারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। কিন্তু আগুনের ব্যাপ্তি ক্রমাগত বাড়তে থাকলে খবর পেয়ে বিকেল সোয়া ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে আসে। কক্সবাজার জেলা শহর, রামু, উখিয়া ও টেকনাফ ফায়ার সার্ভিসের সাতটি টিম আগুন নিয়ন্ত্রণে অভিযানে নামে। রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে পুরো আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
বালুখালী ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ তানজীম বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছুদ্দৌজা বলেন, আগুনে ক্যাম্পের বসতি ও রোহিঙ্গাদের জানমালের কতটা ক্ষতি হয়েছে তা জানা যায়নি।
চকরিয়া প্রতিনিধি: : কক্সবাজার, প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়ায় মোহাম্মদ আব্দুল গাফফার এবং মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : কক্সবাজারের টেকনাফে ‘পূর্বশত্রুতার জেরে’ দিনে-দুপুরে ‘দুর্ঘটনায় মায়ের মাথা ফাটার’ কথা জা...বিস্তারিত
টেকনাফ প্রতিনিধি : : বঙ্গোপসাগরের মিশ্রিত নাফনদের প্রধানমুখ কক্সবাজারের টেকনাফের কায়ুখখালী খাল দখল করে মার্কেট নির্...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাতের কারণে ...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : কক্সবাজার পৌরসভার সাথে সমন্বিতভাবে নগরের প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় একটি নতুন প্রকল্প বাস্...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : কক্সবাজারের তরুণরা কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিসহ সরকারি সেবাসমূহ আরও সহজে পেতে চান। একই সাথে ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Coxsbazar | Developed By Muktodhara Technology Limited