শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৩:৫০ পিএম, ২০২১-০৭-১৫
এম এ সাত্তার, কক্সবাজার;
* ভুলের প্রতিকার পাওয়া সহজ নয়, হয়রানির সঙ্গে খালি হচ্ছে পকেট।
* স্লটের কারণে এক ইউনিট কমবেশি দেখালেই বিলের ব্যাপক ফারাক হয়।
* বাসায় না গিয়েই খেয়ালমতো ইউনিট লেখে মিটার-রিডার।
মে মাসের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ গ্রাহকের হাতে পৌঁছালে শুরু হয় তোলপাড়। এসময় পল্লী বিদ্যুতের ওই মনগড়া বিল পেয়ে পবিস'কে 'রক্তচোষা' আখ্যায়িত করেন কয়েক গ্রাহক। বিদ্যুৎ লাইনের সিষ্টেম লস এ যে বিদ্যুৎ অপচয় হয়, তা গ্রাহকের মিটারে গায়েবি ব্যবহার দেখিয়ে এককালিন আদায় করে নেন বিদ্যুৎ অফিস।
মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে মানুষের আয় উন্নতি নাথাকায় সংসারের ঘানি টানতে নাকানি-চুবানি শেষ নেই। এর মধ্যে 'মরার উপর খাঁড়ার ঘা' মনগড়া বিল নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গ্রাহক। অতিরিক্ত বিল কিভাবে সমন্বয় হবে এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে কোনো সদুত্তরও পাচ্ছেন না তারা। এ অবস্থায় করোনা ঝুঁকির মধ্যেই তাদের বিদ্যুৎ অফিসে ধর্না দিতে হচ্ছে।
শহরে কিংবা গ্রামে, বিদ্যুতের ভুলভাল বিলিং নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক মাসে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন তার পরিবর্তে যে পরিমাণ ব্যবহার করেননি, সেটারই বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে অসংখ্য গ্রাহককে। মোটা অঙ্কের ভূতুড়ে বিল দেখে অনেকে অতিষ্ঠ, আবার গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো হয়ে পড়েন আতঙ্কিত। এ ধরনের ভুলের শিকার হলে কেউ প্রতিকার পান আবার কেউ পান না। হয়রানি কিংবা বিদ্যুৎ লাইন কেটে দেয়ার ভয়ে অনেকে ওই বিলই পরিশোধ করে দেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কালক্রমে নানান অনিয়ম করে গ্রাহকের পকেট কেটে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিস। এসব অপকর্মের যুগপৎ সমাধানও মিলছে না। সচেতন মহল মনে করেন, গ্রাহকদের নিজেদেরকেই বিদ্যুৎ অফিসের এ অপকৌশল এবং জালিয়াতি বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে।
জানা গেছে, গ্রাহক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সেই স্লটের ওপর বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণ করে বিদ্যুৎ অফিস। এর সঙ্গে ডিমান্ড চার্জ এবং মিটার ভাড়া, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) যুক্ত হয়। একজন গ্রাহক যত বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তার মাসিক বিল তত বেশি মূল্যহারে নির্ধারিত হয়। লাইফ লাইনসহ (৫০ বা তার চেয়ে কম ইউনিট ব্যবহারকারী) সাত শ্রেণিতে গ্রাহকদের ভাগ করেছে এ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। সে অনুযায়ী মাসে শুন্য থেকে ৭৫ ইউনিট (কিলোওয়াট) পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে গ্রাহককে প্রতি ইউনিট ৪ টাকা ১৯ পয়সা হারে বিল দিতে হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপের (৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট) প্রতি ইউনিট ৫ টাকা ৭২ পয়সা, তৃতীয় ধাপে (২০১ থেকে ৩০০) ৬ টাকা, চতুর্থ ধাপে (৩০১ থেকে ৪০০) ৬ টাকা ৩৪ পয়সা, পঞ্চম ধাপে (৪০১ থেকে ৬০০) ৯ টাকা ৯৪ পয়সা এবং ৬০০ ইউনিটের বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের ষষ্ঠ ধাপের গ্রাহক হিসেবে ১১ টাকা ৪৬ পয়সা হারে বিল শোধ করতে হয়। একজন গ্রাহক মাত্র ১ ইউনিট বিদ্যুতের কারণে পরের ধাপের বিলিংয়ে পড়ে যেতে পারেন। এতে তার টাকার অঙ্কেও হতে পারে ব্যাপক তারতম্য। তাই মিটার রিডাররা চাইলেই ইউনিট কমবেশি লিখে ভূতুড়ে বিলের ফাঁদে ফেলে দিতে পারে যে কোনো গ্রাহককে।
প্রতি মাসে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে গিয়ে মিটার দেখে বিল প্রস্তুত করার দায়িত্ব বিদ্যুৎ অফিসের। কিন্তু কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান, প্রতি বছরই একটি বড় সংখ্যক গ্রাহক ভূতুড়ে কিংবা অতিরিক্ত কিংবা ভুল বিলিংয়ের শিকার হয়। অনেকে আবার এ ভোগান্তি এড়াতে অভিযোগও করেন না।
সময়ভেদে বিদ্যুৎ ব্যবহারে অনেক পার্থক্য হয়। শীত, বর্ষাকালে এসি এবং ফ্যানের ব্যবহার তুলনামূলক কম হওয়ায় বিদ্যুতের ব্যবহার কম থাকে। আর গরমকালে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার বেড়ে যায়। সেই হিসেবে বিদ্যুৎ বিল কমবেশির পার্থক্য থাকার কথা। কিন্তু সময় অনুপাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার কম বেশি হলেও বিলের ক্ষেত্রে পার্থক্য খুঁজে পান না কোন গ্রাহক। দিগুন তিনগুণ বৃদ্ধিতে ঠিকই প্রতিমাসে বিল গ্রাহকের হাতে পৌছে যায়।
গ্রাহক অভিজ্ঞতা অনুযায়ী ধরা যাক একটি বাসায় প্রতি মাসে ৪০০ ইউনিটের মধ্যে বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমাবদ্ধ থাকে। সে হিসেবে ডিমান্ড চার্জ ও ভ্যাট ছাড়া ঐ বাসার বিদ্যুৎ বিল আসবে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৫৩৬ টাকা। কিন্তু মিটার রিডার দুই মাস রিডিং না নিয়ে বা মিটার না দেখে তার মাসিক বিল করল ৩৫০ ইউনিট ধরে। পরে তৃতীয় মাসে গিয়ে তিনি আগের দুই মাসের সঞ্চিত ১০০ ইউনিট ঐ মাসের সঙ্গে যোগ করে ৫০০ ইউনিটের বিল তৈরি করলেন। ব্যবহারের এ পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে গ্রাহক চতুর্থ থেকে পঞ্চম ধাপের গ্রাহক হিসেবে হাতে বিল পান। অথচ প্রকৃত অর্থে তিনি চতুর্থ ধাপের গ্রাহক।
দায়িত্বে অবহেলাজনিত এ বিলিং জালিয়াতির কারণে ঐ গ্রাহককে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬ টাকা ৩৪ পয়সার পরিবর্তে ৯ টাকা ৯৪ পয়সা হারে পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ ২ হাজার ৫৩৬ টাকার পরিবর্তে ৪ হাজার ৯৭০ টাকা বিল দিতে হবে। মিটার রিডার আগের দুই মাসের জমে থাকা ইউনিট এই মাসে ঢুকিয়ে দেওয়ার কারণে খরচ দ্বিগুণ হয়ে গেল। সীমিত আয়ের মানুষের জন্য এ অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করা কঠিন। সে কঠিন দায়ই বছরের পর বছর বয়ে বেড়াচ্ছেন অগণিত গ্রাহক।
এমনই এক বাস্তব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন পিএমখালীর ছনখোলা মাঝের পাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলমের পুত্র সৈয়দ আকবর। তিনি জানান, মিটার রিডার চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল মাসে তার বিলে ব্যবহত ইউনিট দেখিয়েছে গড়ে ১৫ ইউনিট, (গত এপ্রিল মাসে মিটার রিড়িং ছিল ৫৮৫ ইউনিট)। উক্ত মাসগুলোতে বিলের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে গড়ে ১০৩ টাকা বিলম্ব মাশুল সহ ১০৭ টাকার মধ্যে। চলিত বছরের কয়েকটি বিল পর্যালোচনা এ তথ্য পাওয়া গেছে)। অথচ ওই সময়ে তার প্রকৃত ব্যবহার আরো কম/বেশি ছিল।
অতঃপর মে মাসের বিদ্যুৎ বিল হাতে পেয়ে তার চোখ কপালে উঠে গেল। কেননা এ বিলে হঠাৎ তার মিটারে বিদ্যুৎ ব্যবহার দেখানো হয় ২৮০ ইউনিটের। ফলে তার বিল হয় ১ হাজার ৭৮০ টাকা (মিটার রিডিং ৮৬৫ ইউনিটের। এরকম অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে একাধিক গ্রাহকের।
খুরুশকুল ফকিরপাড়া বাজারের এক ব্যবসায়ী (গ্রাহক) অভিযোগ করেন,
আমাদের ডেস্ক : : কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে হতাহ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃ কক্সবাজারের সু পরিচিত মানবিক ব্যক্তি হাজী মন্জুর আলমের নিজের একটি ...বিস্তারিত
চকরিয়া প্রতিনিধি: : কক্সবাজার, প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়ায় মোহাম্মদ আব্দুল গাফফার এবং মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : কক্সবাজারের টেকনাফে ‘পূর্বশত্রুতার জেরে’ দিনে-দুপুরে ‘দুর্ঘটনায় মায়ের মাথা ফাটার’ কথা জা...বিস্তারিত
টেকনাফ প্রতিনিধি : : বঙ্গোপসাগরের মিশ্রিত নাফনদের প্রধানমুখ কক্সবাজারের টেকনাফের কায়ুখখালী খাল দখল করে মার্কেট নির্...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাতের কারণে ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2024 Dainik Amader Coxsbazar | Developed By Muktodhara Technology Limited