শিরোনাম
সুব্রত আপন, স্টাফ রিপোর্টার: | ০৭:৪৭ পিএম, ২০২৩-০১-২২
আমাদের দেশে যারা সড়কপথে চলাচল করেন, বলা চলে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা তা করে থাকেন। সড়ক যেন এখন মরণ ফাঁদ। ইদানীং প্রতিনিয়ত বাড়ছে এ ঝুঁকির পরিমাণ। প্রতিদিনই সড়ক পথে কেউনা কেউ হতাহত হচ্ছেন। আর প্রতিটি ক্ষেত্রেই এসব হতাহতের জন্য বেপরোয়া ড্রাইভিং, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্সহীন ড্রাইভার, ত্রুটিপূর্ণ রাস্তা, সড়কপথে আইনের শাসনের অনুপস্থিতি ইত্যাদি দায়ী। বিশেষ করে বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণে দেশে শত শত মানুষের মৃত্যু ঘটা সহ হাজার হাজার মানুষ আহত হয়ে থাকেন। দেশের বিভিন্ন জেলার মতো কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলাগুলোকে নেহায়েত কম ঘটনা ঘটেনি সড়ক দুর্ঘটনা। প্রত্যেক উপজেলা হাসপাতালগুলোতে খবর নিয়ে জানা যায়, প্রতি বছর তিনশত থেকে সাড়ে তিনশত মত রোগী আসে দুর্ঘটনাজনিত কারণে।
আমার নিজ উপজেলা মহেশখালী পৌরসভা গোরকঘাটা চরপাড়া নিবাসী ভূবণচন্দ্র দে এর ছেলে বিকাশ দে এক বেপরোয়া টমটম ড্রাইভারের গাড়ীর ধাক্কায় এখনো কক্সবাজার সদর হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। বিগত কয়েকবছর পূর্বে আমার এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী বেপরোয়া ট্রাকচালকের গাড়ীর ধাক্কায় তপু দাশ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। দৈত্যাকার আকৃতির বাস-ট্রাকের ধাক্কায় কার জীবন প্রদীপ নিভে যাবে আমরা কেউ তা জানি না। বিশেষ করে অপেক্ষাকৃত ছোটখাটো যানবাহনকে যেভাবে দৈত্যাকার বাস-ট্রাকগুলো তেড়ে ধরে পিষে মারে, সে দৃশ্য অত্যন্ত ভয়ংকর। যিনি বা যারা সেসব দৃশ্য দেখেছেন বা দেখার পর যারা বেঁচে আছেন, শুধু তারাই তার ভয়াবহতা জানেন; অন্য কেউ নন।
সরজমিনে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোর মোড়গুলো গেলে দেখো মিলে বড় বড় ট্রাক ও দৈত্যআকৃতির বাসগুলোরদৌরাত্ম্যের। ট্রাক বাস ড্রাইভারেরা ছোটকাট গাড়ীগুলো পাত্তাই না দিয়ে বেপরোয়া গাড়ী চালিয়ে যায়, ফলে বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। কেউ পঙ্গুত্ববরণ করে সারাজীবনের জন্য, কেউ ঘটনান্থলে মারা যায়। অপর দিকে আশাপাশের সদরের বিভিন্ন ভিতরের রাস্তাগুলোতে চলে টমটমগাড়ী ড্রাইভারের বাহাদুরী। অধিকাংশ টমটম ড্রাইভার অপ্রশিক্ষিত, লাইসেন্সবিহীন। ফলে রাস্তাঘাটে টমটমগাড়ীতে বিমানের আদলে বেপেরোয়া চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে বলেছেন, গুরুত্বপূর্ন রাস্তাগুলোতে যথাসম্ভব সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে স্পিড মিটার লাগিয়ে গাড়ি চলাচলের অনিয়ম চিহ্নিত করে যেতে পারে, পাশাপাশি রাস্তার একটি নির্দিষ্ট দূরবর্তী স্থানে পুলিশের মোবাইল ফোন নাম্বার সংবলিত সাইনবোর্ড লাগানো যেতে পারে এবং রাস্তায় বেপরোয়া ডাইভিং ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি পাওয়া গেলে পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে সঙ্গে জানালে কিছুটা হলেও দুর্ঘটনা কমবে বলে বিশ্বাস করা যায়। তিনি খুব হতাশ হয়ে বলেন, জানি না আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ রাস্তাঘাটে বেপরোয়া ড্রাইভিং, ফিটনেসবিহীন গাড়ির হাত থেকে কবে রক্ষা পাবেন, রাস্তাঘাটে চলাচলে কবে নিরাপদ সড়ক পাবেন, আর আমাদের সড়কযাত্রাই বা কবে দুশ্চিন্তামুক্ত হবে, পরিবারের একজন সদস্য কোথাও যাত্রা করলে গন্তব্যে না পৌঁছা পর্যন্ত অন্য সদস্যরা কবে কিভাবে অশান্তি কাটিয়ে উঠবেন।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রণব কুমার চৌধুরী জানান, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে কোনো ব্যক্তির জানমালের ক্ষতি হলে এটি নিছক দুর্ঘটনা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। বেপরোয়া ও অবহেলা করে গাড়ি চালানো এবং এর ফলে কারও ক্ষতি হলে আইনের চোখে তা স্পষ্ট অপরাধ। শুধু যে অপরাধ তা কিন্তু নয়, এর জন্য শাস্তি অবধারিত এবং দায়ী চালক বা ব্যক্তি, মালিকদেরও গুনতে হবে ক্ষতিপূরণ।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান, দণ্ডবিধির ২৭৯ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের ব্যবহৃত কোনো সড়কে বেপরোয়া বা অবহেলামূলকভাবে কোনো গাড়ি চালান, এর ফলে যদি মানুষের জীবন বিপদাপন্ন হয় কিংবা কোনো ব্যক্তির আহত বা জখম হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, তাহলে দায়ী চালকের জন্য শাস্তি অবধারিত। এ শাস্তির পরিমাণ হবে তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড। সর্বনিম্ন এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড। দণ্ডবিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী যদি কেউ বেপরোয়া বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালিয়ে কোনো ব্যক্তিকে গুরুতর আঘাত করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বেপরোয়া বা বিপজ্জনক গাড়ি চালানোর শাস্তি হচ্ছে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড। এর সঙ্গে গাড়ি চালানোর লাইসেন্সও নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এ অপরাধ একই চালক তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার করলে তাঁকে ছয় মাস কারাদণ্ড কিংবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। সঙ্গে গাড়ি চালনার লাইসেন্সও এক মাস পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। যদি চালক শুধু দুর্ঘটনা ঘটান, তাহলে মোটরযান আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি একই অপরাধ আগেও ঘটানো হয়েছে এটা প্রমাণিত হয়, তবে ছয় মাস কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। দণ্ডবিধির ৩০৪ খ ধারা অনুযায়ী বেপরোয়া গাড়ি চালালে এবং এর ফলে নরহত্যা নয় কারও এমন মৃত্যু হলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
আমাদের ডেস্ক : : কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে সংঘটিত সহিংসতা, নাশকতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে হতাহ...বিস্তারিত
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃ কক্সবাজারের সু পরিচিত মানবিক ব্যক্তি হাজী মন্জুর আলমের নিজের একটি ...বিস্তারিত
চকরিয়া প্রতিনিধি: : কক্সবাজার, প্রতিনিধি : কক্সবাজারের চকরিয়ায় মোহাম্মদ আব্দুল গাফফার এবং মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : কক্সবাজারের টেকনাফে ‘পূর্বশত্রুতার জেরে’ দিনে-দুপুরে ‘দুর্ঘটনায় মায়ের মাথা ফাটার’ কথা জা...বিস্তারিত
টেকনাফ প্রতিনিধি : : বঙ্গোপসাগরের মিশ্রিত নাফনদের প্রধানমুখ কক্সবাজারের টেকনাফের কায়ুখখালী খাল দখল করে মার্কেট নির্...বিস্তারিত
আমাদের ডেস্ক : : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাতের কারণে ...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2025 Dainik Amader Coxsbazar | Developed By Muktodhara Technology Limited