চট্টগ্রাম   শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪  

শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটের লক্ষ্য আসলে কী, কী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ?

নাসির আহমাদ রাসেল    |    ০৮:১৭ পিএম, ২০২২-০৭-২৩

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটের লক্ষ্য আসলে কী, কী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ?

 

ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অর্জনের লক্ষ্যে একটি নতুন অর্থনৈতিক জোটের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এই জোটের নাম দেয়া হয়েছে ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক ফর প্রসপারিটি বা আইপিইএফ।  তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতেই এই কৌশলগত অর্থনৈতিক জোট। এটি পরিষ্কার যে, গতানুগতিক আঞ্চলিক চুক্তিগুলোর মতো আইপিইএফ কেবল কিছু বাণিজ্য সুবিধা আদান-প্রদানের জন্য গঠিত হয়নি। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামগ্রিক আর্থ-রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণে এই চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাণিজ্য, সরবরাহ ব্যবস্থা, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও অবকাঠামো, কর ও দুর্নীতি দমন এই চারটি বিষয়কে আইপিইএফ চুক্তির ভিত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রথম এশিয়া সফরে এসে চলতি বছরের ২৩ মে টোকিওতে প্রাথমিকভাবে ১২টি দেশকে যুক্ত করে আইপিইএফের আনুষ্ঠানিক যাত্রার কথা ঘোষণা করেন।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া, ব্রুনাই, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এই জোটের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে নাম লিখিয়েছে। বলা হয় যে, এই ১২টি দেশ বৈশ্বিক জিডিপির ৪০ শতাংশ উৎপন্ন করে। তাই আমরা বলতে পারি আইপিইএফ এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোটগুলোর একটি। নতুন এই জোটের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ভূরাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নতুন এই অর্থনৈতিক জোটে বাংলাদেশকে টানতে বেশ কয়েক মাস ধরেই নানা স্তরে আলোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র । যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে। কিন্তু এমন এক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে এই জোটে চাচ্ছে যখন,  বাংলাদেশের বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পে চীনের ক্রমবর্ধমান সম্পৃক্ততা বাড়ছে এবং র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মতো ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বৃহৎ এই জোটে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়া উচিৎ কি না সেই প্রশ্ন এখন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

নতুন এই জোটের উদ্দেশ্য আসলে কী?

এই কাঠামোর উদ্দেশ্য কি? এটির কি কোন রাজনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষা আছে নাকি শুধুমাত্র কঠিন অর্থনৈতিক জোট? 
ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বলছেন, একুশ শতকের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন অর্থনৈতিক কাঠামোতে ডিজিটাল অর্থনীতি, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি, টেকসই সরবরাহ ব্যবস্থা এবং দুর্নীতিবিরোধী প্রচেষ্টার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে, তিনি আমেরিকান বৈশ্বিক ব্যস্ততাকে একীভূত করতে চান এবং আইপিইএফ সেই প্রচেষ্টার অংশ। কিছু বিশেষজ্ঞ আইপিইএফকে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এর একটি পাল্টা হিসাবে দেখেন যা ২০১৩ সালে চীনা সরকারের একটি বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়ন কৌশল। এবং এটি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনকে ধারণ করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগলিক হাতিয়ার। চীন বলেছে যে আইপিইএফ কেবল একটি খালি খোসা ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি কোন সুনির্দিষ্ট ফলাফলের দিকে পরিচালিত করবে না। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন বাণিজ্য সচিব জিনা মারি রাইমন্ডো বলেছেন যে তারা আইপিইএফ দেশগুলিকে চীনের বাইরে প্রধান উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে দেখেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বক্তব্য মোটেও বাস্তবসম্মত নয়। কারণ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় বেশিরভাগ দেশের প্রধান রপ্তানি বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন তাদের প্রধান সরবরাহ চেইন অংশীদার। তাহলে কিভাবে এই এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলি চীনের অবদান ছাড়াই উৎপাদন কেন্দ্র হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করবে, কারণ চীন ১২০ টিরও বেশি দেশের জন্য বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার? সুতরাং, চীন ছাড়া ওই অঞ্চলে একটি বড় উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এবং এশিয়া প্যাসিফিক দেশগুলি আশা করে যে আইপিইএফ তাদের মার্কিন বাজারে আরও রপ্তানি করতে সাহায্য করবে, চীনকে আঘাত করবে না। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলাম চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক সুমনা গুহের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই আলোচনায় হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ও বাণিজ্য দপ্তরের কর্মকর্তারা যুক্ত হয়েছিলেন। ওই আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র বিস্তারিতভাবে আইপিইএফের বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে উপস্থাপন করে। এরপর বাংলাদেশের কাছে নতুন মার্কিন জোটের মূল উপাদান-সংবলিত ৬ পৃষ্ঠার একটি অনানুষ্ঠানিক খসড়া তুলে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশকে দেয়া আনুষ্ঠানিক খসড়া অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোট আইপিইএফে চারটি প্রধান উপাদান রয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের কাছে যে অনানুষ্ঠানিক খসড়া যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে, তাতে এই চার উপাদান বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হয়েছে। ন্যায্য ও সহনশীল অর্থনীতি নামের প্রথম উপাদানে কীভাবে এই শর্ত পূরণ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। এখানে ডিজিটাল অর্থনীতি, বিকাশমান প্রযুক্তি, শ্রম অধিকার, পরিবেশ, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ, অবাধ, সুষ্ঠু ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিশ্চিতের স্বার্থে স্বচ্ছতা এবং প্রক্রিয়ায় উন্নত চর্চার বিকাশ, খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক টেকসই নীতিমালা এবং জোটে যুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিতের বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়ন, পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে উত্তরণ ও কার্বন নিঃসরণ হ্রাস নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহারে সক্ষমতা গড়ে তোলার পাশাপাশি এ ক্ষেত্রে তহবিল জোগানের বিষয়টি প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সুষ্ঠু করব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমনের লক্ষ্যে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়াগুলোর বাস্তবায়ন, ঘুষবিরোধী জোরালো অভিযান, সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও সৃজনশীল প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং সরকারি কেনাকাটা ও জমি হস্তান্তরে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কথা খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় (ইন্দো-প্যাসিফিক) অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য কাজ করা আইপিইএফ এর ঘোষিত লক্ষ্য। তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতেই এই কৌশলগত অর্থনৈতিক জোট। সাম্প্রতিক ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় যে যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রচেষ্টা নতুন নয়। ওবামা প্রশাসনের সময় ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১২টি দেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) নামক একটি বাণিজ্য জোট গঠন করা হয়েছিল। ওবামার এশিয়াকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির একটি অন্যতম স্তম্ভ ছিল এই জোট এবং এর মূল উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বলয় বৃদ্ধির মাধ্যমে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকানো। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র টিপিপি চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিল এবং এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয়তাও অনেকখানি কমে আসে। তাই ওবামার উত্তরসূরি বাইডেন কর্তৃক নতুন এই জোট ঘোষণার মধ্যে দিয়ে পুনরায় এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয়তা দৃশ্যমান হচ্ছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।  যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন প্রচেষ্টাকে আরও গভীরভাবে বোঝার জন্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চলমান জোট রাজনীতির দিকেও তাকানো দরকার। যুক্তরাষ্ট্র টিপিপি থেকে বেরিয়ে আসার পরেও জাপানের নেতৃত্বে  ‘কম্প্রিহেনসিভ অ্যান্ড প্রোগ্রেসিভ এগ্রিমেন্ট ফর ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (সিপিটিপিপি)’ নামে টিপিপি জোটটি সচল রয়েছে। এই জোটের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া। গত বছর সেপ্টেম্বরে চীন এই জোটে অংশগ্রহণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানায়। এর একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়া একটি নতুন সামরিক জোটের ঘোষণা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রভাবশালী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএসআইসি এর গবেষক জোয়ানা শেলটনের মতে, চীনের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রকে তার মিত্র ও সহযোগীদের থেকে দূরে রাখা। নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি শাংহাইয়ের গ্লোবাল চায়না স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মারিয়া আডেল কারাইয়ের মতে, সিপিটিপিপিকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যেই চীন এই জোটে যোগ দিতে চায়। আইপিইএফ নিয়ে আলোচনায় আরেকটি প্রাসঙ্গিক জোট হচ্ছে রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি)। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই বাণিজ্য চুক্তিটি কার্যকর হয়েছে এই বছরের প্রথম দিন থেকে। শুল্ক মুক্ত অবাধ বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করাই এই চুক্তির লক্ষ্য। আশিয়ান সদস্য ১০টি দেশ ছাড়াও এই জোটে রয়েছে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড। অনেক বিশেষজ্ঞ এই জোট গঠনকে চীনের জন্য একটি ভূ-রাজনৈতিক জয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাদের মতে, জোটভুক্ত প্রতিটি দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে চীন এই জোটের নীতি নির্ধারণে অন্যতম প্রভাবকের ভূমিকা রাখবে। তবে এই জোটে চীনের একক আধিপত্য খর্ব করতে জাপান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই এই জোটের সদস্য হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছে। লক্ষণীয় বিষয়, এই জোট গঠনের আলোচনায় ভারত নিবিড়ভাবে যুক্ত থাকলেও শেষ মুহূর্তে সরে আসে। আইপিইএফ জোটের সদস্য দেশের মধ্যে অধিকাংশ দেশই টিপিপি ও আরসিইপি এর সদস্য। ব্যতিক্রম কেবলমাত্র চীন। চীনকে বাদ দিয়ে জোট গঠনের প্রচেষ্টা স্বাভাবিকভাবেই চীনা কর্তৃপক্ষ ভালোভাবে দেখছে না। তারা ইতোমধ্যেই এই নতুন জোটের সমালোচনায় সরব হয়েছে। আইপিইএফ উদ্বোধনের আগের দিনই চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, স্বাধীনতা ও মুক্ত বাণিজ্য বুলির আড়ালে এই জোটের মূল উদ্দেশ্য চীনকে ঠেকানো। আলোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট, তা হলো, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয়তা বৃদ্ধির ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই আইপিইএফ গঠন করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের চলমান দ্বন্দ্বের প্রভাব এই জোটের কার্যক্রমকেও প্রভাবিত করবে। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়াসহ যে দেশগুলো টিপিপি, আরসিইপি ও আইপিইএফ ৩টি জোটেরই সদস্য, তাদের কার্যক্রম থেকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার কৌশল সম্পর্কে ধারণা নিতে পারে বাংলাদেশ।
 

মার্কিন অর্থনৈতিক জোটে যোগদান প্রশ্নে বাংলাদেশকে সতর্কতা চীনের 

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোটে (আইপিইএফ) বাংলাদেশের যোগদান বিষয়ে ইতিমধ্যে সতর্কতা দিয়েছে চীন। ঢাকাস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং ওই জোটে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা নাকচ করে বলেছেন, কোনো জোটে যাওয়া না যাওয়ার সিদ্ধান্ত একান্তই বাংলাদেশের। তবে বেইজিং আশা করে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার এবং  দেশটির জনগণ অবশ্যই বিচক্ষণতার স্বাক্ষর রাখবে। সম্প্রতি ঢাকায় এক সেমিনারে লি জিমিং এ নিয়ে কথা বলেন। লি বলেন, আমাদের অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতা জরুরি। সবাই জানেন, সম্প্রতি খারাপ কিছু ঘটেছে। এ নিয়ে শোরগোল হচ্ছে। আমাদের এই অঞ্চলে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু ঘটেছে। অকাস (অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জোট), কোয়াড (জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট) ও আইপিইএফ (ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন অর্থনৈতিক জোট) ছাড়াই এক দশক ধরেই আমরা ভালো আছি। হঠাৎ করে এ বিষয়গুলোকে সামনে আনা হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এসব ছাড়াই আমরা আরও ভালো থাকবো। কাজেই আমাদের এসবে যোগ দেয়ার প্রয়োজন আছে কি না? তা নিয়ে আরও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এ বিষয়ে (মার্কিন উদ্যোগে যোগদান) বাংলাদেশ যে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথেষ্ট বিচক্ষণতার পরিচয় দিবে। ঢাকা এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তটিই নিবে বলেও আশা করেন তিনি।  রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা এ অঞ্চলে শান্তি চাই। আমাদের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটি বাংলাদেশসহ যেকোনো রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চীনা দূত বলেন, এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়, কীভাবে চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি বাড়ানো যায়। চীনের উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে।  বেইজিংয়ে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামানের সঙ্গে বৈঠকেও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া বিষয়ক মহাপরিচালক লিউ জিনসং মার্কিন নেতৃত্বে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ঘিরে যেসব জোট বা বলয় তৈরি হয়েছে তাতে যোগদান প্রশ্নে বাংলাদেশকে সতর্ক করেন। 

কী সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ? 
ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর ঘিরে চীন আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগিতা গত কয়েক বছরে অনেক দৃশ্যমান। করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময় টিকা কূটনীতি নিয়ে বড় দুই শক্তির প্রতিযোগিতা থেকে বিষয়টি এখন আর কারও অজানা নয়। তবে চীনের অঞ্চল ও পথের উদ্যোগ (বি আরআই) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) ঘিরে যে উত্তেজনা তৈরি করেছে, আইপিইএফ তাতে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। বিশেষ করে ঢাকা ও বেইজিংয়ে বসে চীনের কূটনীতিকেরা যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন, বাংলাদেশকে সতর্ক করছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে সাম্প্রতিক মার্কিন উদ্যোগে আবারও তারা ব্যতিব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।
তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে এই দুই দেশের সম্পর্কের সমীকরণের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ আইপিইএফের বিষয়ে কালক্ষেপণের নীতিতে হাঁটছে। কারণ, কয়েক বছর ধরেই পদ্মা সেতুর পাশাপাশি বাংলাদেশের অনেক বড় কাঠামোতে সহযোগিতা, অর্থায়নসহ নানাভাবে চীন জড়িয়ে গেছে। প্রতিরক্ষা খাতেও দেশটির সঙ্গে সম্পৃক্ততা দীর্ঘদিন ধরে। আবার যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কটি বহুমাত্রিক হওয়ার পর বিনিয়োগ শুধু জ্বালানিতে সীমিত। তা ছাড়া র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞায় রাজনৈতিক পরিম-লে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে বোঝাপড়ায় ঘাটতি অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এমন এক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ মনে করছে, আইপিইএফের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সময় নেয়া সমীচীন। তাছাড়া আমরা এখনও এই অর্থনৈতিক উদ্যোগের ভবিষ্যত জানি না। এই কাঠামোর দ্বারা কোন কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে, একটি শক্তিশালী এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য অস্ট্রেলিয়া এবং ব্রিটেনের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক অকাস (অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জোট) নামে একটি নতুন অংশীদারিত্ব ঘোষণা করা হয়েছিল। আমরা নিরাপত্তা, কূটনৈতিক এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এমন কোনো সহযোগিতা দেখিনি যার লক্ষ্য ছিল। এবং এই অঞ্চলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আরেকটি জোট হল কোয়াড। এই কৌশলগত নিরাপত্তা সংলাপের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, কোয়াড একটি শোভাময় জোট ছাড়া আর কিছুই নয়। এটি পরিষ্কার যে, গতানুগতিক আঞ্চলিক চুক্তিগুলোর মতো আইপিইএফ কেবল কিছু বাণিজ্য সুবিধা আদান-প্রদানের জন্য গঠিত হয়নি। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সামগ্রিক আর্থ-রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ধারণে এই চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাণিজ্য, সরবরাহ ব্যবস্থা, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ও অবকাঠামো, কর ও দুর্নীতি দমন এই ৪টি বিষয়কে আইপিইএফ চুক্তির ভিত্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই সব ভিত্তির ওপর গড়ে উঠা চুক্তির বিধানগুলো কি হবে তা এখনও বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়নি। তাই বাংলাদেশের লাভ-ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্রটি পাওয়ার জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদে উপরোক্ত ৪টি বিষয়ই বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই চুক্তিতে অংশগ্রহণ করতে হলে বাংলাদেশকে দুর্নীতি দমন, অর্থপাচার ও কর ফাঁকি রোধ, পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি, শ্রমিকদের নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সংস্কার করতে হবে। এই সব সংস্কার করা হলে সাধারণ জনগণ যে উপকৃত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। ব্যবসায়ী সমাজ ও অন্যান্য স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো এসব সংস্কারে কতখানি আগ্রহী হবে তাই দেখার বিষয়। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য যে কোনো বাণিজ্য চুক্তির অন্যতম আকর্ষণ হচ্ছে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা প্রাপ্তি। কিন্তু এই বিষয়ে আইপিইএফ চুক্তিতে এখনও বিশেষ কিছু বলা হয়নি। উল্টো যুক্তরাষ্ট্র স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় শুল্ক হ্রাস ও বাজারে (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে) প্রবেশের বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হবে না। ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তবাণিজ্য চুক্তিগুলোর একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য থাকত যে চুক্তিভুক্ত দেশকে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে মুক্তবাজার বিকাশের পক্ষে সহায়ক অভ্যন্তরীণ সংস্কার সাধন করা। এখন দেখার বিষয়, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোকে আইপিইএফ এ টানতে যুক্তরাষ্ট্র কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিবে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে এই চুক্তিটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে আরও ১২-১৮ মাস সময় লাগবে। এই সময়ে তারা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে আইপিইএফ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। ফলে সামনের দিনে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সংলাপগুলোর দিকে আমাদের নজর রাখতে হবে। ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ আর স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাণিজ্য সুবিধা পাবে না। তাই বিভিন্ন বাণিজ্য জোটে অংশগ্রহণ ও মুক্তবাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশেকে বিশ্ব অর্থনীতির প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে। এই বিষয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতি এখনও আশাব্যঞ্জক নয়। উদাহরণ হিসেবে তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশের অন্যতম প্রতিযোগী ভিয়েতনামের কথা বলা যায়। ভিয়েতনাম ইতোমধ্যেই টিপিপি, আরসিইপি ও আইপিইএফ ৩টি জোটেরই সদস্য। ফলে তাদের জন্য এই অঞ্চল বাণিজ্য সুবিধার সকল দরজাই খোলা রয়েছে। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৩টি জোটের কোনোটিতেই নেই। এখনও বাংলাদেশের মূল সহায় স্বল্পোন্নত দেশের তকমা। স্বল্পোন্নত দেশগুলো, যেমন কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, লাওস, যারা মোটামুটিভাবে বাংলাদেশের সঙ্গেই স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ করবে, তারাও ইতোমধ্যেই আরসিইপির সদস্য হয়েছে। বাংলাদেশকে তাই উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার অংশ হিসেবে বিভিন্ন অর্থনৈতিক জোটে অংশগ্রহণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির ভরকেন্দ্র ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল। এই অঞ্চলের চলমান জোট রাজনীতির বাইরে থাকা বাংলাদেশের জন্য প্রায় অসম্ভব। তাই বাংলাদেশের উচিৎ এই অঞ্চলকেন্দ্রিক একটি সুস্পষ্ট নীতি প্রণয়ন করা। আশিয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার বিষয়টি অনেক দিন ধরেই আলোচনায় আছে। বিমসটেক-এফটিএ এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য একটি কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম হতে পারে।আলোচনায় একটি বিষয় স্পষ্ট, তা হলো, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয়তা বৃদ্ধির ধারাবাহিক প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই আইপিইএফ গঠন করা হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের চলমান দ্বন্দ্বের প্রভাব এই জোটের কার্যক্রমকেও প্রভাবিত করবে। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়াসহ যে দেশগুলো টিপিপি, আরসিইপি ও আইপিইএফ ৩টি জোটেরই সদস্য, তাদের কার্যক্রম থেকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার কৌশল সম্পর্কে ধারণা নিতে পারে বাংলাদেশ। আরসিইপি ও আইপিইএফ এ যুক্ত হওয়ার ব্যাপারেও বাংলাদেশকে বিচক্ষণতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দক্ষতার সঙ্গে এই সব আলোচনার জন্য বাংলাদেশের উচিত যোগ্য জনবল নিয়োগ করা। যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েক মাস ধরেই বাংলাদেশকে আইপিইএফে দেখতে চাওয়ার বিষয়ে তাদের আগ্রহের কথাটি প্রকাশ্যে তুলে ধরেছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা যখন বাংলাদেশের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে একটি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, বুঝতে হবে এটি তাদের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক মহলের আকাক্সক্ষার বহিঃপ্রকাশ। তাই এ নিয়ে দেশের স্বার্থে এবং বাস্ততার নিরিখে সিদ্ধান্ত নেয়াটাও জরুরি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। 

রিটেলেড নিউজ

গরমে নিন চোখের যত্ন

গরমে নিন চোখের যত্ন

আমাদের ডেস্ক : : এখনও তীব্র গরম শুরু না হলেও দিনের আবহাওয়া ক্রমাগত বাড়ছে। গরম যত আসতে থাকবে দেখা দেবে নানা শারীরিক ...বিস্তারিত


চিরনিদ্রায় শায়িত মাওলানা লুৎফর রহমান

চিরনিদ্রায় শায়িত মাওলানা লুৎফর রহমান

আমাদের ডেস্ক : : চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন জনপ্রিয় আলেম, ইসলামি আলোচক ও বক্তা মাওলানা লুৎফর রহমান।   সোমবার (৪ মার্চ) ...বিস্তারিত


মাওলানা লুৎফর রহমান আর নেই

মাওলানা লুৎফর রহমান আর নেই

আমাদের ডেস্ক : : জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মাওলানা লুৎফর রহমান (রহ.) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রা...বিস্তারিত


নতুন জায়গায় ঘুমের সমস্যা হলে

নতুন জায়গায় ঘুমের সমস্যা হলে

আমাদের ডেস্ক : : কাজের প্রয়োজনে বা বেড়াতে আমাদের কখনো রাতে বাড়ির বাইরে থাকতে হয়। এটা হতে পারে দেশে বা দেশের বাইরে, জ...বিস্তারিত


কনজাংটিভাইটিস হলে যা করবেন, যা করবেন না

কনজাংটিভাইটিস হলে যা করবেন, যা করবেন না

আমাদের ডেস্ক : : আমাদের চোখের যে সাদা অংশ আছে তা লাল হয়ে যাওয়া, লালচে বা গোলাপি হয়ে যাওয়াকে চোখ ওঠা বলে। মূলত রোগটির ...বিস্তারিত


ঝড়-বৃষ্টির ও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে 

ঝড়-বৃষ্টির ও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে 

ঢাকা অফিস :: : দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শনিবারও (২৮ মে) কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে কয়েকটি জেলায় তাপপ...বিস্তারিত



সর্বপঠিত খবর

ক্যালিফোর্নিয়ায় আন্তর্জাতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রামের মেধাবী সন্তান প্রিয়ম চক্রবর্তীর যোগদান

ক্যালিফোর্নিয়ায় আন্তর্জাতিক গাড়ি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রামের মেধাবী সন্তান প্রিয়ম চক্রবর্তীর যোগদান

আমাদের ডেস্ক : : ডেস্ক রিপোর্ট :: চট্টগ্রামস্থ  লোহাগাড়ার  কৃতি সন্তান প্রিয়ম চক্রবর্তী ক্যালিফোর্নিয়ায় ...বিস্তারিত


সদরের পি এম খালী ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী কেফায়ত উল্লাহর ঈদ শুভেচ্ছা

সদরের পি এম খালী ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী কেফায়ত উল্লাহর ঈদ শুভেচ্ছা

আমাদের ডেস্ক : : সদরের পি এম খালী ইউনিয়নের বর্তমান জনপ্রিয় চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম মাস্টারের ভাগিনা পিএমখালী ব...বিস্তারিত



সর্বশেষ খবর