শিরোনাম
স্পোর্টস ডেস্ক | ১২:৫৫ পিএম, ২০২২-০৪-২৮
এবার ফুটবল প্রশিক্ষণ নিতে স্বপ্না, তানিশা ও শিখা যাবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগালে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পুরো উপজেলা জুড়েই বইছে আনন্দের বন্যা। স্বপ্না, তানিশা ও শিখা ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক, দিন মজুর, টমটম চালকের তিন কিশোরী কন্যা। সিনহা জাহান শিখা উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের রাজাবাড়িয়া গ্রামে টমটম চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা বিপ্লব মিয়ার মেয়ে। তারা জানে কিভাবে এগিয়ে যেতে হয়, সমাজের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে, শত কটুক্তি সহ্য করে, আজ তারা সফলতার দ্বারপ্রান্তে।
স্বপ্না আক্তার জিলি উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের ইলাশপুর গ্রামের কৃষক ফয়জুদ্দিন ও তানিয়া আক্তার তানিশা মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের দিন মজুর দুলাল মিয়ার মেয়ে। ওই পাড়াগাঁয়ের তিন কিশোরী যাচ্ছেন, ফুটবলের পোস্টারবয় খ্যাত ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগালে। ২০১৯ সালে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব গোল্ডকার্প টুর্ণামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় জেলার নান্দাইল উপজেলার শেরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিল এই তিন কিশোরী। তিনজনই বর্তমানে নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
সম্প্রতি বঙ্গমাতা নারী ফুটবল দলের সেরা ৪০ ফুটবলারকে নিয়ে বিকেএসপিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণের পর ওই ৪০ জনের মধ্যে ১৬ জনকে বাছাই করা হয় পর্তুগালে ফুটবল প্রশিক্ষণে নেয়ার জন্য। ১৬ জনের মধ্যে ১১ জন মূল দলের। সেই ১১ জনের দলে রয়েছেন শিখা ও স্বপ্না। অতিরিক্ত ৫ জনের একজন তানিশা।
সিনহা জাহান শিখা তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তার মা মারা যান। এরপর নানা বাড়িতে থেকে তার শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। মা মারা যাওয়ার পর বাবা বিপ্লব মিয়া আরেকটি বিয়ে করেন। তবে, থাকেন নিজ বাড়ি জাহাঙ্গীরপুরে। সন্তানদের ভরণ পোষণের খরচ দিতেন। খোঁজ খবরও নিতেন নিয়মিত।
তিন বোন এক ভাইয়ের মধ্যে শিখা তৃতীয়। শিখা ছোটবেলা থেকে খেলাধুলায় বেশ আগ্রহী ছিলেন। ফুটবল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতেন। তার আগ্রহ দেখে প্রশিক্ষক মগবুল হোসেনের মাধ্যমে উপজেলা, জেলা, বঙ্গমাতা গোল্ডকাপসহ বিভিন্ন পর্যায়ের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করেন। শিখা বলেন, ‘মেয়ে হয়ে কেন ট্রাউজার পরে ফুটবল খেলি। এজন্য অনেক কটুকথা শুনতে হয়েছে শুরুতে। তবে, আমার বাবা সব সময় আমাকে উৎসাহ দিতেন। সদর থেকে ১০ কিলোমিটারের দুরে গ্রামে থাকি। আসা যাওয়ার খরচ বাবা দিতেন। আজ বাবার সেই স্বপ্ন পুরণ হওয়ার দ্বারপ্রান্তে। আগে যারা কটুকথা বলত। তারাই এখন আমাদের নিয়ে গল্প বলে। এখন আমার চাওয়া পর্তুগাল থেকে ফিরে দেশের হয়ে খেলে বিশ্বমঞ্চে যেন বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে পারি।’
দিন মজুর দুলাল মিয়ার মেয়ে তানিয়া আক্তার তানিশা। তারা দুই ভাই বোন। নিজেদের থাকার ঘর ছাড়া আর কিছু নেই। মায়ের সাথে পৌর শহরে কেনাকাটা করতে এসে চন্ডিপাশা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস দেখে তারও খেলার প্রতি আগ্রহ বাড়ে। সেখান থেকেই তার খেলার শুরু। তবে, প্রতিবেশিদের কটুকথা তাকে দমাতে পারেনি। নিয়মিত প্র্যাক্টিস চালিয়ে যেতে থাকেন। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে খেলার সুযোগ পেয়ে সেটাই কাজে লাগিয়েছেন তানিশা। তানিয়া আক্তার তানিশা বলেন, ‘আমি প্রথমে খেলা করতে গিয়ে অনেকের রোষানলে পড়েছি। তবে, ২০১৮ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপে ভাল খেলার কারণে পর্তুগালে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। প্রশিক্ষণ শেষে দেশের হয়ে জাতীয় দলে খেলতে চাই। এছাড়াও গরিব বাবার সংসারের হাল ধরতে চাই।’
স্বপ্না আক্তার জিলি কৃষক ফয়জুউদ্দিনের মেয়ে। অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে সংসারের খরচ যোগাতে না পারলেও মেয়ের ফুটবল খেলার খরচ নিয়মিত দিতেন।
স্বপ্না আক্তার জিলি শেরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বড়দের খেলা দেখে তার মধ্যে ফুটবল প্রেম তৈরি হয়। তখন থেকেই স্কুলে নিয়মিত ফুটবল খেলতো সে। খেলার প্রতি এমন আগ্রহ দেখে স্কুলের সহকারী শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন উজ্জল তার খেলার সুযোগ করে দেন।
স্বপ্না আক্তার জিলি বলেন, ‘আমি অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত এসেছি। প্র্যাকটিস করতে আসবো তার টাকা পর্যন্ত যোগাতে কষ্ট হয়েছে। কিছুদিন আগে টাকার অভাবে প্র্যাকটিসে আসতে পারিনি। তবে, হাল ছাড়িনি। আমার ইচ্ছা ছিল বলেই পেরেছি। আমি প্রথমেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই, আমাদের পর্তুগালে প্র্যাক্টিস করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য। এর প্রতিদান যেন আমরাও দেশবাসীকে দিতে পারি। সেজন্য দোয়া চাই।’ সহকারী কোচ তসলিম আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা পর্তুগালে প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ পেয়েছে। এতে আমরা অনেক খুশি। আমরা চাই প্রশিক্ষণ শেষে জাতীয় দলের হয়ে খেলে তারা দেশের ফুটবলকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরুক।’
আমাদের ডেস্ক : : ভোরে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা ছিল ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষা। কিন্তু সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি ...বিস্তারিত
স্পোর্টস ডেস্ক : গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বেশ কিছুদিন ফাঁকা সময়ই কেটেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। ফের শুরু হতে যাচ...বিস্তারিত
স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তান সফরকে কেন্দ্র করে ঘোষিত বাংলাদেশ ‘এ’ দলে তারকা ক্রিকেটারদের ছড়াছড়ি। দলে আছেন মুশফি...বিস্তারিত
স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ১৯৩০ সালে। ২০৩০ সালে বিশ্বকাপের ১শ বছর পূর্ণ হবে। বি...বিস্তারিত
স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ এ’ দলের সঙ্গেই পাকিস্তান সফরে যেতে পারেন জাতীয় দলের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক...বিস্তারিত
স্পোর্টস ডেস্ক : ৪ ͯ ১০০ মিটার ফ্রিস্টাইল রিলেতে কাল যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক উপহার দিয়েছে যু...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2025 Dainik Amader Coxsbazar | Developed By Muktodhara Technology Limited